শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আলাল খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ফেরতের দাবি জানালেন বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন কুবিতে নতুন রাজনৈতিক দল আসা প্রয়োজন ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে: সারজিস আপিল শুনানি শেষ, রায় যেকোনো দিন : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কেনিয়ার চুক্তি বাতিল যুক্তরাষ্ট্রে আদানির বিরুদ্ধে পরোয়ানার পর, বাংলাদেশ কী করবে? মোহিনীর সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন,এআর রহমানের বিচ্ছেদ; কি বলছেন পুত্র-কন্যা? শেয়ারে ‘ধস’ গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলার পরেই বোমা হামলার পরিকল্পনা নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে: ফ্লোরিডায় গৃহহীন ব্যক্তি গ্রেফতার বিতর্কিত আউট নিয়ে প্রশ্ন আর সমালোচনার ঝড় রাহুলের যেভাবে ফ্রিজে রাখা যায় রসুন

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি মুহম্মদ জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে

bornomalanews
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৩ Time View

মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার মামলায় জাফর ইকবালসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। গণহত্যায় উস্কানিদাতা হিসেবে এই মামলায় জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালতের প্রধান কৌঁসুলি।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিও করেছে। যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আওয়ামী সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইসিটির প্রধান কৌঁসুলি মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজাকার’ উক্তির প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক বিক্ষোভ মিছিল করেন। ১৪ জুলাই রাতের ওই মিছিলে তারা স্লোগান দেন, ‘তুমি কে আমি কে – রাজাকার, রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে – স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’ এই স্লোগান ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত শিক্ষক ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর। ফেসবুকে করা এক পোস্টে করেন আন্দোলনকারীদের কটাক্ষ।

১৬ জুলাই ‘সাদাসিধে কথা’ নামে নিজের একটি ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিয়ে দুই প্যারায় ছোট্ট মতামত লিখেছেন তিনি। তার নিজ হাতে লেখা চিরকুটও সেখানে আপলোড করা হয়।

সেখানে তিনি লেখেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয়, আর কোনো দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইব না। ছাত্রছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়ত সেই ‘রাজাকার’। আর যে কয়দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন, সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?”

নিবন্ধনের এ অংশটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষোভ দেখা দেয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনই রূপ নেয় ২৪’ এর গণঅভ্যুত্থানে, ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তার দলের অনেক নেতাও দেশটিতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পরে আগের সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হকও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তাঁর মতামত প্রকাশের পর এর নিন্দা জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

পরদিন ১৭ জুলাই দুপুর থেকে শাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে একটি বিবৃতি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ফেসবুক ওয়ালে ও শাবিপ্রবির বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়। এ বিবৃতিতে ‘ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে শাবিপ্রবিতে আজীবন নিষিদ্ধ করা হলো’ বলে উল্লেখ করা হয়।

এসময় শাবিপ্রবির আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী নাম না প্রকাশের শর্তে টিবিএসকে বলেছিলেন, “মুহম্মদ জাফর ইকবালকে আমরা খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু তার গতকালকের লেখাটি আমাদের হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। শিক্ষার্থীরা যখন খুন হচ্ছে, হামলার শিকার হচ্ছে তখন একজন শিক্ষক হয়ে তিনি এ ধরনের লেখা লিখতে পারেন না। তাই আমরা তাকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্যে নিষিদ্ধ করেছি।”

একইদিন নারায়ণগঞ্জে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই পুড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আন্দোলনকারীরা। একইসাথে তাকে বয়কটের ঘোষণাও দেন শিক্ষার্থীরা।

বই পুড়িয়ে দেয়ার পর জাফর ইকবালের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভিন্ন মতপোষণ করা আর আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে সম্বোধন করা এক নয়। তিনি অতীতেও ছাত্রদের ন্যায্য আন্দোলন নস্যাৎ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রাজাকার বলে তিনি ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা এমন মেরুদণ্ডহীন ব্যক্তিকে বর্জন করি।

অধ্যাপক জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় উস্কানিদাতা হিসেবে চিহ্নিত তিনি। এই আন্দোলন দমানো এবং হত্যা-গণহত্যা সংঘটনে তার উস্কানি তৎকালীন সরকারকে মদদ দিয়েছে। তাই তিনি এই গণহত্যার দায় থেকে দুরে থাকতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছে। এর তদন্ত ও বিচার শুরু হলে তিনি নিশ্চয় সুবিচার পাবেন।

ড. জাফর ইকবাল বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের পক্ষে যায় এমন বয়ান নির্মাণে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। অভিযোগ আছে, ছাত্রসমাজের যৌক্তিক আন্দোলনগুলোকে অকার্যকর করতেও সাবেক সরকারের হয়ে ভূমিকা রাখেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102