বৃদ্ধ বয়সে অস্থিভঙ্গুর রোগ থেকে রক্ষা পেতে সময় থাকতেই হাড়ের পুষ্টি যোগাতে হয়।
সার্বিকভাবেই দেহের সুস্থতা বজায় রাখতে কঙ্কাল বা হাড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তবে বয়স ত্রিশ হতে না হতেই হাড়ের বিস্তৃতি থমকে যায়।
এই তথ্য জানিয়ে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন পুষ্টিবিদ লরা ইউ বলেন, “আরও খারাপ বিষয় হল নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পরে ‘অস্টিওপোরোসিস’ বা হাড়-ভঙ্গুর রোগের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।”
তাই বয়সের সাথে হাড়ের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এমন খাবারের মধ্যে প্রথমেই আসে দুধের কথা।
দুধ: হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন ডি- এসব খনিজের উৎস।
টেক্সাস ভিত্তিক পুষ্টিবিদ লরেন টুইগ একই প্রতিবেদনে জানান, চর্বি কমানো এরকম এক কাপ দুধ থেকে ৩০৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়, যা দৈনিক চাহিদার এক তৃতীয়াংশ। আরি ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ২৭৭ মাইক্রোগ্রামস।
এছাড়াও আছে প্রোটিন, যা হাড়ের বিস্তৃতি বৃদ্ধি করে। এটা বয়সের সাথে জরুরি।
তফু: শুধু নিরামিষ খাবারই নয়, এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আঁশ এবং অল্প পরিমাণ পটাসিয়াম।
এই তথ্য জানিয়ে লন্ডন ভিত্তিক পুষ্টিবিদ জোসি পোর্টার আরও বলেন, “উচ্চমাত্রায় এসব পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করতে পারলে হাড়ের জন্য উপকারী খনিজ সংগ্রহে ভূমিকা রাখে। মানে হল হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে ভাঙার সম্ভাবনা কমে।”
আর শক্ত তফুতে বেশি পরিমাণে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম শক্ত তফু থেকে মিলবে ১৪৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম; যেখানে একই পরিমাণ নরম তফু থেকে পাওয়া যায় ৭৮ মিলিগ্রাম।
সার্ডিন মাছ: “অনেকেই হয়ত জানে না, সার্ডিনসহ সামুদ্রিক ছোট মাছ ক্যালসিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। যা হাড় শক্তিশালী করতে সাহায্য করে”- বলেন টুইগ।
মাত্র দুটি সার্ডিন থেকে ৯১.৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ১.১৫ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব।
পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ফল: যেমন কলা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী আর অস্থিভঙ্গুর রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
পর্টার বলেন, “হাড় থেকে ক্যালসিয়াম হ্রাসের পরিমাণ কমায় পটাসিয়াম। এভাবে এই খনিজ হাড়ের শক্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
কলা ছাড়াও পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ফলের মধ্যে আছে- ফুটি, তরমুজ ইত্যাদি।
সবুজ পত্রল এবং ক্রুসিফেরাস সবজি: পালংশাক, ব্রকলি, কপি- এরকম সবজি থেকে মিলিবে হাড়ের জন্য উপকারী ভিটামিন কে।
পোর্টার বলেন, “প্রোটিনের কার্যকারিতা সার্বিকভাবে বজায় রাখতে কাজ করে ভিটামিন কে। আর এভাবে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।”
উচ্চ মা্ত্রায় ভিটামিন কে গ্রহণ করা মানে, হাড় ফাটার সম্ভাবনা কমা।
তবে শুধু সবুজ সবজি নয়, পাশাপাশি কমলা সবজি যেমন- মিষ্টি আলু, কমলা ক্যাপসিকাম এবং গাজর থেকেও মিলবে ভিটামিন কে।
আর এসব খাবার খাওয়ার পর, গায়ে রোদ মাখার কথা ভোলা যাবে না। আর খোলা আবহাওয়াতে ব্যায়াম করতে পারলে হাড়ের জোর বাড়বে।