শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৩ অপরাহ্ন

আসাদ রাশিয়ায় কেন পালালেন, তার ভবিষ্যৎ কী?

bornomalanews
  • Update Time : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২ Time View

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ফলে শুধু তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশ শাসনের ২৪ বছরের অবসান হয়নি, বরং তার পরিবারের ৫০ বছরের শাসনও শেষ হয়েছে। ২০০০ সালে আসাদ প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে, তার বাবা হাফিজ আল-আসাদ প্রায় তিন দশক ধরে দেশটির শাসনক্ষমতায় ছিলেন। এখন, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সিরিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের চেষ্টা করছে, আর আসাদ পরিবার রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে।

আসাদ কেন রাশিয়ায় পালালেন?

রাশিয়া ছিল আসাদের প্রধান কট্টর মিত্র, বিশেষ করে ২০১৫ সালে সিরিয়ায় আসাদ সরকারের সমর্থনে বিমান হামলা চালানোর পর। রাশিয়া সিরিয়ায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে, এবং তাদের অভিযানের মাধ্যমে আসাদ সরকার যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। তবে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার মনোযোগ সিরিয়ায় কিছুটা সরে যায়। যখন সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে, রুশ গণমাধ্যম জানায় যে আসাদ এবং তার পরিবার মস্কোতে চলে গেছেন এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, আসাদের রাশিয়ায় আসা “রাষ্ট্রপ্রধানের সিদ্ধান্ত” ছিল এবং এটা মানবিক কারণে করা হয়েছে।

আসাদ পরিবার ও তাদের অবস্থা

আসাদের স্ত্রী, আসমা, ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি সিরিয়ার জাতিগতভাবে প্রভাবশালী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তবে লন্ডনে বেড়ে ওঠেন এবং সেখানে শিক্ষালাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে সিরিয়ায় চলে এসে আসাদকে বিয়ে করেন। আসমা বর্তমানে রাশিয়ায় আছেন এবং তার বাবার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে, আসমা এখনও ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসতে পারেন, যদিও বর্তমানে তিনি রাশিয়াতেই অবস্থান করতে পারেন।

আসাদ পরিবারের সম্পদ সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার পর, জানা গেছে যে তাদের এক থেকে দুই বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে, যা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তারা বিদেশে সম্পদ রাখার জন্য বিভিন্ন বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট এবং অফশোর কোম্পানি ব্যবহার করেছেন।

আসাদ বিচারের মুখোমুখি হবেন?

আসাদের পতনের পর, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সিরিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের তদন্তের দাবি করেছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার, যুদ্ধাপরাধ, নির্যাতন এবং গুমের ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আসাদ এবং তার সরকারের কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করছে। ফ্রান্সে আসাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে, যা ২০১৩ সালের রাসায়নিক হামলার ঘটনায় দেয়া হয়েছে।

আসাদ, যেহেতু রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন, সেক্ষেত্রে তিনি অন্য কোনো দেশে পালিয়ে গিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে পারেন। তবে, রাশিয়া তার নাগরিকদের কখনো প্রত্যর্পণ করে না এবং আসাদ নিজেও রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশে যেতে চাইবেন না, কারণ অন্য দেশে তাকে সিরিয়ায় ফিরিয়ে পাঠানোর সম্ভাবনা থাকতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আসাদ পরিবারের ভবিষ্যৎ এবং সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102