রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর একই দিনে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং খেলাফত মজলিস সম্মেলন আয়োজনের দাবি করায় এক ধরনের বিভ্রান্তি ও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। দুটি দলই একই স্থানে তাদের সম্মেলন করার অনুমতি পেয়েছে বলে দাবি করছে, কিন্তু গণপূর্ত বিভাগ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন শুধু এবি পার্টিকে দেওয়া হয়েছে।
এবি পার্টি তাদের প্রথম জাতীয় সম্মেলন ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করার জন্য গত ২ ডিসেম্বর গণপূর্ত বিভাগ থেকে চূড়ান্ত বরাদ্দপত্র পেয়েছে। তারা তাদের প্রচারণা চালিয়ে গেছে এবং সম্মেলনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাদের প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল বলেন, তারা চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরই নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে প্রচারণা শুরু করেছে এবং বিদেশী অতিথিদের টিকেট ও আবাসন ব্যবস্থা পর্যন্ত সম্পন্ন করেছে।
অন্যদিকে, খেলাফত মজলিসও ২৮ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের তৃণমূল সম্মেলন আয়োজনের প্রচারণা শুরু করেছে। তারা গণপূর্ত বিভাগ থেকে অনুমোদন পাওয়ার দাবি করলেও, বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খেলাফত মজলিসকে এখনও কোনো চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়নি। গণপূর্ত বিভাগ জানায়, এবি পার্টি, সিপিবি এবং খেলাফত মজলিস একদিন একই সময়ে সম্মেলন করার জন্য আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাই শেষে এবি পার্টিকে ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। সিপিবি কে ৩ জানুয়ারির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়, কিন্তু খেলাফত মজলিসের অনুমোদন মুলতুঃ তদন্তের ঘাটতির কারণে নির্ধারণ করা হয়নি।
এবি পার্টির পক্ষ থেকে আনোয়ার সাদাত টুটুল বলেন, “গণপূর্ত কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তার দায় তাদেরই। আমরা নিয়ম মেনে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরই আমাদের প্রস্তুতি শুরু করেছি।”
অন্যদিকে, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী বলেন, “আমরা ২৪ অক্টোবর গণপূর্ত বিভাগে আবেদন করি এবং ২ ডিসেম্বর আমাদের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু এবি পার্টি আমাদের ১৫-২০ দিন পরে আবেদন করেছে, অথচ তাদের অনুমোদন পাওয়া হয়েছে। তারা মাঠের পূর্বাংশ ব্যবহার করতে চেয়েছে, আমরা তাদের বলেছি, ২৭ ডিসেম্বর সম্মেলন করলে আমরা ২৮ ডিসেম্বর আমাদের অনুষ্ঠান করতে পারব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একই দিনে দুটি দলের সম্মেলন আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া ছিল অত্যন্ত দুর্বল ও অস্বাভাবিক সিদ্ধান্ত। এতে উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংকট, যেখানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো প্রতীকী স্থান দুটি দল ব্যবহারের জন্য দাবি করছে, যার ফলে ভবিষ্যতে উভয়ের মধ্যে সমঝোতার পথ মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।