ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স ইসরায়েলকে সমর্থন জানালেও, চীন ও রাশিয়া ইরানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইরান ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সামরিক ঘাঁটি ধ্বংসের হুমকি দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সামরিক বিশ্লেষকরা এই সংঘাতকে শুধুমাত্র আঞ্চলিক নয়, বরং একটি ব্যাপক যুদ্ধের সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন। সম্প্রতি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মধ্য ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হামলায় অন্তত দুজন নিহত এবং ১৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলার পর শহর কেঁপে ওঠে এবং ধোঁয়া ও ধুলোর মধ্যে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এদিকে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ দাবি করেছে যে, তারা ইরানের বিভিন্ন অবকাঠামোয় নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকজন সামরিক ও পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ইরান শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল পর্যন্ত পাঁচ দফায় দেড় শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। যদিও ইসরায়েলি বিমান বাহিনী বেশিরভাগ হামলা প্রতিহত করার দাবি করেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ইরান যদি হামলা অব্যাহত রাখে, তাহলে তেহরানকে চড়া মূল্য দিতে হবে। এদিকে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি জানিয়েছেন, তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যে পাঁচবার আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন, ইসরায়েলই যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রকৃত অংশীদার। ইরানও পাল্টা হুমকি দিয়েছে যে, তারা মার্কিন, ব্রিটিশ ও ফরাসি সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে। ইরানের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সংঘাত আগামী দিনগুলোতে আরও তীব্র হবে এবং ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থার দখল করা সব অঞ্চল এবং মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে ছড়িয়ে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংঘাত যদি আরও বাড়তে থাকে, তাহলে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের অশনি সংকেত হয়ে উঠতে পারে। বিশ্ব শান্তির জন্য এটি একটি গুরুতর সংকট, যা দ্রুত সমাধানের প্রয়োজন।