বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরেছেন এমন ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা আজ ইস্কাটনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় ৭১ হলে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তীব্র বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এ সময় তারা আরব আমিরাতে তৎকালীন কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেনের গ্রেফতার ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনর্বাসনের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ১৮৮ জন আমিরাত ফেরত প্রবাসীদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। কিন্তু তার বক্তব্য চলাকালেই উত্তেজিত প্রবাসীরা অভিযোগ করতে থাকেন, “আমাদের জঙ্গি বানিয়ে দেয়ার পেছনে কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন দায়ী। তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।”
প্রবাসীদের দাবি, জামাল হোসেন আরব আমিরাতের সরকারকে ভুল তথ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে উৎসাহিত করেছিলেন। এর ফলে তাদের অনেককে বিনা কারণে গ্রেফতার ও শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। তারা অভিযোগ করেন, ওই সময় কনস্যুলেটের একাধিক কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন এবং ভিসা বিক্রিসহ আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন।
ড. আসিফ নজরুল উত্তেজিত প্রবাসীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আপনাদের অভিযোগের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। আগামীকাল সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মন্ত্রণালয়ে এসে বিস্তারিত জানালে আমি ব্যবস্থা নেব। অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ তদন্ত করা হবে এবং প্রয়োজনে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।”
তবে প্রবাসীরা ক্ষোভ কমাতে ব্যর্থ হন। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ড. আসিফ নজরুল অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। প্রবাসীরা স্লোগান দিতে থাকেন, “বিচার চাই, বিচার চাই” এবং “ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।”
প্রবাসীরা জানান, তাদের দীর্ঘদিনের কষ্টার্জিত সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কেউ কেউ কোটি টাকার বেশি অর্থ হারিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের জোর দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন প্রবাসীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান এবং বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং তাদের পুনর্বাসনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শেষে ১৮৮ জন প্রবাসীর মধ্যে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়। তবে প্রবাসীদের দাবি পূরণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো ঘোষণা আসেনি।