বাংলাদেশে জ্বালানি তেল, রেলপথ উন্নয়ন এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ে বড় সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে সাতটি দেশের আটটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪ লাখ ২৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে। এর জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৯৬ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। আমদানি করা জ্বালানি তেলের মধ্যে ৮ লাখ ৮০ হাজার টন গ্যাস অয়েল, ১ লাখ ৯০ হাজার টন জেট এ-ওয়ান, ৭৫ হাজার টন মোগ্যাস, ২ লাখ ৫০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল এবং ৩০ হাজার টন মেরিন ফুয়েল অন্তর্ভুক্ত।
এই তেল চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে জিটুজি ভিত্তিতে আমদানি করা হবে। চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান পেট্রোচীনা ও ইউএনআইপিইসি এবং ভারতের আইওসিএলসহ অন্যান্য দেশ থেকে বিএসপি, পিটিএলসিএল, পিটিটিটি, ওকিউটি ও ইউএনওসি তেল সরবরাহ করবে।
ক্রয় কমিটিতে রেলপথ উন্নয়নের দুটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রথমত, ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট-ছাতক বাজার মিটারগেজ রেলপথ পুনর্বাসনের জন্য ২১৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ ২০২৩ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। মীর আখতার হোসেন লিমিটেড প্রকল্পের পূর্ত কাজের দায়িত্ব পেয়েছে।
দ্বিতীয়ত, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরালে একটি ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণের জন্য ২৯৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এ কাজের দায়িত্ব পেয়েছে জিপিটি এবং স্ট্যান্ডার্ড।
সরকার ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সয়াবিন তেল সরবরাহের জন্য সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি লিটার তেলের দাম পড়বে ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা। মসুর ডাল সরবরাহ করবে শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ, যার জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা। প্রতি কেজি ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৪ টাকা ৯৫ পয়সা।
চট্টগ্রামের মহেশখালীতে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং পরিচালনার কাজ জিটুজি ভিত্তিতে করার পরিবর্তে প্রতিযোগিতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ট্যাংক ফার্ম, ভাসমান জেটি এবং সমুদ্রপথে ২২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাইপলাইন স্থাপিত হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তগুলো বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা, পরিবহন খাতের উন্নয়ন এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।