বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন ফেরারি আসামি নির্বাচনে অযোগ্য, ‘না ভোট’ বাধ্যতামূলক!! “ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে “ বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র: ‘আমরা কোনো দলের নয়’ — স্পষ্ট বার্তা দিলেন ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বিজয়নগরে জাপা কার্যালয়ে সংঘর্ষ : ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত বহু, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা-পুলিশ আগামীকাল প্রকাশিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত রোডম্যাপ পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বিএনপির বৈঠক ১৩ বছর পর উপদেষ্টা মাহফুজের বাবা ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক ভারতের মাটিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি বিদেশে বাংলাদেশি মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ, ‘জিরো পোর্ট্রেট’ নীতি কার্যকর

ঈদের জামাতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা!!

bornomalanews
  • Update Time : রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫
  • ৯৪ Time View

জেরুজালেমের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ মোহাম্মদ আল হুসাইন স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ঘোষণা করেছেন যে, রোববার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে। মুসলিম বিশ্ব যখন উৎসবের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন ফিলিস্তিনের গাজায় ঈদের কোনো আনন্দ নেই। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডের মানুষের কাছে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—বেঁচে থাকা।

গাজা, যা গত দেড় বছর ধরে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, সেখানে গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া হামলায় ৯২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই সংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি ছাড়িয়ে গেছে, আর আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লাখ ১৪ হাজারে। গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ঈদের খুশি যেন এক মরীচীকা। ঈদ মানে নতুন পোশাক, মিষ্টি খাবার, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো—কিন্তু গাজার মানুষের কাছে এসব এখন বিলাসিতা।

গাজার বাসিন্দা মোহামেদ আল সারকা বলেন, “ঈদ আমাদের জন্য নয়। আমাদের শিশুদের জন্যও নয়। তাদের জন্য একটি নতুন কাপড়ও কিনতে পারিনি। যেখানে খাবার জোটানোই দুষ্কর, সেখানে ঈদের আয়োজনের কথা ভাবাই অসম্ভব।” তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি হামলায় তার তিন সন্তান নিহত হয়েছে। এখন তিনি বেঁচে থাকা চার সন্তানকে নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

৪৭ বছর বয়সী নোয়া আবু হানি যুদ্ধের কারণে উদ্বাস্তু হয়েছেন। তিনি আগে জাবালিয়া ক্যাম্পে ছিলেন, কিন্তু ইসরায়েলি হামলায় ক্যাম্প বিধ্বস্ত হওয়ায় এখন আশ্রয় নিয়েছেন উনরোয়া ক্যাম্পে। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “আগে ঈদের সময় কা’ক (ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কুকিজ) তৈরি করতাম। সেগুলো বিক্রি করতাম রোজার শেষ দিনে, রাস্তার পাশে ছিল উৎসবের আমেজ। কিন্তু এখন কিচ্ছু নেই। শুধু বেঁচে থাকার লড়াই।”

সাত বছরের হানিন তার পোড়া ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। কারণ জিজ্ঞেস করতেই সে বলল, “আমার জামা নেই, পুতুল নেই, আমাদের ঘরও নেই। আমি ঈদ পছন্দ করি না।” শুধু হানিন নয়, গাজার শত শত শিশুর মুখে হাসি নেই। তারা জানেই না ঈদের খুশি কেমন হতে পারে। খাদ্য সংকটের কারণে তাদের ঈদের দিনে বিশেষ কিছু খাওয়ার সুযোগও নেই।

এদিকে, উম্মে মোহামেদ নামের এক ফিলিস্তিনি মা তার সন্তানদের জন্য সামান্য কিছু কুকিজ বানানোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “বাচ্চাদের মুখে সামান্য হাসি ফোটাতে চাচ্ছি। ঈদ নেই, কিন্তু ঈদের কথা ভুলিয়ে দিতে পারি না।” গাজার পরিস্থিতি এমন যে ঈদের দিনও মানুষ খাবার-পানির সংস্থানের জন্য সংগ্রাম করছে। নতুন পোশাকের পরিবর্তে এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস হলো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি।

গাজার প্রতিটি পরিবার আজ নিদারুণ কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে, বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, আশ্রয়ের অভাব চরমে। ঈদ তাই এখন গাজার মানুষের জন্য আরেকটি কঠিন দিন, যেখানে আনন্দের বদলে বুকভরা বেদনা আর বেঁচে থাকার যুদ্ধই একমাত্র বাস্তবতা। “ঈদ আসে, ঈদ যায়। কিন্তু গাজায় ঈদ আসে না।” —এভাবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলেন গাজার এক বাসিন্দা, যেন তার কথায় ফুটে ওঠে পুরো ফিলিস্তিনের যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102