কখনও আয়ারল্যান্ড, কখনও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ হিসেবে বাংলাদেশে এসেছেন ফিল সিমন্স। আরও আগে খেলোয়াড়ি জীবনে তো এসেছেনই। এবার তিনি এলেন এদেশের একজন হয়েই। বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিতে চলে এলেন ক্যারিবিয়ান এই কোচ।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ মঙ্গলবার বিকেলে বিসিবিতে সংবাদ সম্মেলনে জানান, কোচ হিসেবে সিমন্সকে নিয়োগ দিয়েছেন তারা। বুধবার সকালে ঢাকায় পা রাখলেন ৬১ বছর বয়সী কোচ।
ঢাকায় আসার পরপরই তিনি শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে চলে আসেন। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রস্তুতিতে থাকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে পরিচিত হন নতুন কোচ। কাছ থেকে অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।
চান্দিকা হাথুরুসিংহেকে সরানোর পর এই দায়িত্ব পান সিমন্স। জাতীয় ক্রিকেটারকে শারীরিক আক্রমণ ও বোর্ডের চাকুরে হিসেবে অসদাচরণের জন্য হাথুরুসিংহেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া ও বরখাস্ত করার কথা মঙ্গলবার জানান বিসিবি সভাপতি।
২০১৭ সালে হাথুরুসিংহের পদত্যাগের পর যখন নতুন কোচ খুঁজছিল বিসিবি, তখনও আগ্রহী ছিলেন সিমন্স। ঢাকায় এসে বিসিবিতে প্রেজেন্টেশনও দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেবার দায়িত্বটি না পেলেও এবার হাথুরুসিংহের বদলেই তাকে বেছে নিল এখনকার বোর্ড।
নতুন কোচের নাম জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি মঙ্গলবার বলেছিলেন, এই মুহূর্তে সিমন্সকেই সবচেয়ে যোগ্য মনে হয়েছে তাদের।
“তিন-চারজন কোচের সঙ্গে কথা বলেছি, তার মধ্যে যাকে সেরা মনে হয়েছে… অনেক সময় হয় কী, আমি যেটা মনে করি, যখন আপনি কোচ হিসেবে সুপারস্টার, তখন কতটা মনোযোগ থাকে কাজে… তার চেয়ে বরং যারা সত্যিই পরিশ্রমী… তাকে (সিমন্স) আমি দেখেছি, কাজের ধরন… যখন জিম্বাবুয়ে খেলতে এসেছে, ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেছি, কখনও আলোচনা করেছি যে, কীভাবে সে চিন্তা করে, কীভাবে অনুপ্রাণিত করে (দলকে), এসব দেখে আমার ভালো লেগেছে।”
“তার এজেন্টের সঙ্গেও কথা হয়েছে আমার। সব মিলিয়ে তাকেই সেরা বিকল্প মনে হয়েছে।”
আপাতত স্রেফ মাস পাঁচেকের দায়িত্ব সিমন্সের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়েই মেয়াদ শুরু, থাকবেন ফেব্রুয়ারি-মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২৬ টেস্ট ও ১৪৩ ওয়ানডে খেলা সাবেক এই অলরাউন্ডার ২০০২ সালে খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরপরই নাম লেখান কোচিংয়ে। জিম্বাবুয়ের হারারেতে একটি একাডেমির হয়ে কোচিং শুরুর বছর দুয়েক পর জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পান। ২০০৭ সালে আয়ারল্যান্ডের কোচ হন তিনি।
আইরিশদের সবচেয়ে লম্বা সময়ের কোচ ছিলেন তিনি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা দায়িত্বে থেকে পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরের বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় করে তার কোচিংয়ে। পরে আফগানিস্তানের ব্যাটিং কোচ ও প্রধান কোচও হন ২০১৭ সালে। ২০১৯ সালে আরেক দফায় ফেরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচের দায়িত্বে, যেটি শেষ হয় ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে। এছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় দল ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নানা ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে।