যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। চিনাবাদাম এমনই একটা খাবার।
ভিটামিন ও খনিজের উৎকৃষ্ট উৎস হিসেবে এই বাদাম হৃদস্বাস্থ্য থেকে শুরু করে পেশির ক্ষয় পূরণ- প্রায় সব ক্ষেত্রেই উপকারী ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া দামেও অন্যান্য বাদামের চাইতে সস্তা।
তবে মার্কিন পুষ্টিবিদ ডিস্টিনি মুডি বলেন, “অন্যান্য বিষয়ের মতো বেশি খেলে চিনাবাদামের বাজে প্রতিক্রিয়া দেহে পড়তে পারে।”
ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও জানান,
চিনাবাদামের পুষ্টিগুণের পরিমাণ হল এক সার্ভিং বা ২৮ গ্রাম হিসেবে:
চিনাবাদামের উপকারিতার মধ্যে রয়েছে-
উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস: “প্রতি ১শ’ গ্রাম চিনাবাদাম থেকে মিলবে ২৫ গ্রাম প্রোটিন। ফলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের খাঁটি উৎস হতে পারে এই খাবার”- মন্তব্য করেন ডেস্টিনি মুডি।
এছাড়াও আছে অ্যামিনো অ্যাসিড যা পেশির গঠন ও ক্ষতিপূরণে সাহায্য করে।
হৃদস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: গবেষণায় দেখা গেছে সুষম খাদ্য হিসেবে বাদাম হৃদযন্ত্র সুরক্ষিত রাখতে পারে।
এই বিষয়ে একই প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক পুষ্টিবিদ জিয়ান্না মাসি বলেন, “চিনাবাদামে রয়েছে উচ্চি মাত্রায় মনোআনস্যাচুরেইটেড এবং পলিআনস্যাচুরেইটেড ফ্যাটস। যা হৃদস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।”
এগুলো খারাপ কোলেস্টরল কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
রয়েছে উচ্চমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম: মুডি বলেন, “এক কাপ চিনাবাদাম থেকে দৈনিক চাহিদার ৩০ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করা সম্ভব।”
এই খনিজ হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হৃদসংক্রান্ত কার্যক্রম দৃঢ় করে এবং স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে সাহায্য করে: কারণ হিসেবে মাসি বলেন, “প্রোটিন ও আঁশ থাকায় চিনাবাদাম খেলে অনেকক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দেয়। ফলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর সার্বিকভাবে ক্যালরি গ্রহণ কম হয়।”
এছাড়া চিনাবাদাম ধীরে হজম হয় বলে দীর্ঘক্ষণ খিদা লাগে না। ফলে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা সম্ভব হয়।
প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়তে পারে: বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্য প্রদাহদায়ী।
মুডি বলেন, “চিনাবাদামে রয়েছে নানান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’ কমাতে পারে।”
হজম স্বাস্থ্য উন্নতি করে: আঁশের উৎকৃষ্ট উৎস বাদাম, যা হজম স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য উপকারী।
মাসি ব্যাখ্যা করেন, “হজমতন্ত্রের নিয়মিত কার্যক্রম উন্নতি ঘটিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে বাদাম। আর আঁশ অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর মাইক্রোবায়োম’য়ে সাহায্য করে। ফলে হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।”
রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক রাখা: উচ্চ মাত্রায় চর্বি ও আঁশ থাকার কারণে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে চিনাবাদাম।
মুডি বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে চিনাবাদাম-সহ অন্যান্য বাদাম খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিস’হের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।”
চিনাবাদামে থাকা চর্বি ধীরে হজম হয়। যে কারণে রক্তে হঠাৎ শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে দেয় না।
সম্ভাব্য অপকারিতা
মনে রাখতে হবে
পুষ্টি উপাদানে ভরপুর বলে স্বাস্থ্যকর নাস্তার হিসেবে চিনাবাদাম দারুণ খাবার। তবে অতিরিক্ত এবং লবণ দেওয়া বাদাম খাওয়া এড়াতে হবে।