নদীর এক পাড় যখন ভাঙে তখন আরেক পাড়ে চর জেগে ওঠে। আবার কখনও চরাঞ্চল ভেঙে ভিন্ন জায়গায় সেই চর তৈরি হয়। এটাই নদীর নিয়ম। আর সেই প্রক্রিয়ার মতোই চলছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কখনও ব্যাটিংয়ে নেমে আসে ধ্বংসযজ্ঞ, কখনও সেটি ঠিক হলে শুরু হয় বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ভাঙন।
আজ বোলিং-ফিল্ডিং ঠিক আছে তো কাল সেটি করাল স্রোতে বিলীন। কোনোভাবেই ভাঙন থেকে বের হতে পারছে না টাইগার বাহিনী। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পরে সেই ভাঙন যেন আরও বেড়েছে। তাতে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ধবলধোলাই, ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে ধবলধোলাই এবং শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হার দেখতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে হেরেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিং ব্যর্থতা থেকে কিছুটা মুক্তি মিলল, বোলিং-ফিল্ডিংও হলো প্রত্যাশামতো। তাতে জয়ও ধরা দিল। আর সবশেষ ও তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটিং হলো মোটামুটি, কিন্তু বোলিং-ফিল্ডিংয়ে লেজে- গোবরে অবস্থা। বাংলাদেশের হাত থেকে যেই রাহমানউল্লাহ গুরবাজ ম্যাচ বের করে নিল, তাকে একাধিকবার আউট করার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি টাইগার বাহিনী। হাতে পড়া বল ছেড়েছেন বদলি ফিল্ডার রিশাদ হোসেন। স্ট্যাম্পিং করতে ব্যর্থ হয়েছেন জাকের আলি অনিক। ফিল্ডিংয়ের সময়ে রান আউটের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়।
শেষ ম্যাচে গতি দিয়ে ধাঁধা তৈরি করেছেন নাহিদ রানা। রানও দিয়েছেন কম, পেয়েছেন ২ উইকেট। নাসুম আহমেদ উইকেট না পেলেও ছিলেন বেশ হিসেবি। ১০ ওভারে তিনি দিয়েছেন ২৪ রান, ইকোনমি ২.৪০। মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ তুলনামূলক ভালো করলেও নিরাশ করেছেন শরিফুল ইসলাম। চোটের কারণে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হাত ঘুরাতে পারেননি, এমনকি মাঠও তাকে ছাড়তে হয়েছে। সুযোগ কাজে লাগাতে না পারা ও মাঝের ওভারগুলোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় ম্যাচও হয়েছে হাতছাড়া। আর ম্যাচের সঙ্গে সঙ্গে সিরিজও চলে গেছে আফগানদের দখলে। এর আগে চট্টগ্রামেও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে সিরিজ জিতেছিল আফগানিস্তান। তাতে পরপর দলটির বিপক্ষে দুবার সিরিজ হারল বাংলাদেশ।
শারজায় সিরিজ হারের ম্যাচে তাসকিন আহমেদকে না খেলানো নিয়েও চলছে সমালোচনা। প্রথম দুই ম্যাচে ওপেনার গুরবাজকে ফিরিয়েছিলেন ঢাকা এক্সপ্রেস। অথচ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে তাসকিন সুযোগ পেলেন না একাদশে। সেই সুযোগে জ্বলে উঠেছেন আফগান এই ওপেনার। শুধু শুধু জ্বলেই ওঠেননি, চোখে আঙুল দিয়ে টাইগারদের দেখিয়ে দিয়েছেন পার্থক্য। এছাড়া আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ আজমতউল্লাহ ওমরজাইও হাল ধরেছিলেন শেষ ম্যাচটিতে। মোহাম্মদ নবিও কার্যকরী ইনিংস খেলে জয় নিশ্চিত করেন।