শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন

তদন্তে নামছে এনবিআর ৩২ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে

bornomalanews
  • Update Time : রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৬ Time View

রপ্তানি করার পর দীর্ঘদিন ধরে আয় দেশে আসেনি– এমন ৩২টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করেছে ঢাকা (উত্তর) কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭ কোটি ৫৪ লাখ ডলার বা ৮৮৯ কোটি টাকা দেশে ফেরত আসেনি। কমিশনারেটের মতে, দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসিত না হওয়া অর্থাৎ দেশে ফিরে না আসা রাজস্ব ফাঁকির শামিল। একই সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডে মানি লন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। এ কারণে রপ্তানি আয় না আসার সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের আয়কর ফাঁকির সম্পর্ক রয়েছে কিনা এবং মানি লন্ডারিং-সংশ্লিষ্ট কিনা, তা তদন্তের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেট। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ঢাকা এবং সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলকে এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এনবিআর সূত্র জানায়, এসব প্রতিষ্ঠান কেন রপ্তানি আয় ফেরত আনেনি, সে জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বত্বাধিকার, মালিক ও শেয়ারহোল্ডারদের ইতোমধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে।
এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপেরই রয়েছে ৯টি প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হলো– নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেল, বেক্সটেক্স গার্মেন্ট, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি, অ্যাসেস ফ্যাশন, পার্লেস গার্মেন্ট, কাঞ্চপুর অ্যাপারেলস ও ইলহাম ফ্যাশন। মোহাম্মদী গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ তালিকায়। এগুলো হলো– এমজি নিচ স্টিস, এমজি সারটেক্স, মোহাম্মদি গ্রুপ ও আলিম নিট। ডিবিএল গ্রুপের রয়েছে কালার সিটি, ওয়েমার্ট অ্যাপারেল। আছে কেডিএস গ্রুপের কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ ও সোহান নিট কম্পোজিট। এ কে খান অ্যান্ড কোম্পানির রয়েছে কোটস বাংলাদেশ ও ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশন। নাসা গ্রুপের ওয়েস্টার্ন ড্রেস, ফ্র্যান্ডস স্টাইল, উইনওয়্যার, নিপা গ্রুপের কে সি জ্যাকেট ওয়্যার, এসকিউ গ্রুপের এসকিউ বিরিচিনা রয়েছে এ তালিকায়। কেয়া গ্রুপের রয়েছে কেয়া কসমেটিক্স, স্টোফা টেক্স ফ্যাশন, আমেরিকান ইফার্ড (বাংলাদেশ) ও সীমা ফ্যাশন। এ ছাড়া রয়েছে আজিম অ্যান্ড সন্স, পানাচে নিটেড ক্রিয়েশন্স, সুপ্তি সুয়েটার, আরবান ফ্যাশন ইত্যাদি।
জানা গেছে, রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানকে বন্ড সুবিধায় শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছু বন্ডেড প্রতিষ্ঠান বন্ড সুবিধা ব্যবহার করে কাঁচামাল আমদানি এবং উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি আয় দেশে আনার বিধান থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, তা আসে না। রপ্তানি-পরবর্তী ১২০ দিনের মধ্যে প্রোসিড রিয়েলাইজেশন সার্টিফিকেট বা পিআরসি আসার আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের মাধ্যমে পিআরসি না এলে ওই রপ্তানিমূল্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন মনিটরিং সিস্টেমে ওভারডিউ হিসেবে প্রদর্শন করা হয়।
সূত্র জানায়, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট (উত্তর) বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন মনিটরিং সিস্টেম পর্যালোচনা করে গত এক বছরে ২০৩টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ১৫ কোটি ৭৯ লাখ ডলার ওভারডিউ পেয়েছে। এ বিষয়ে কয়েকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। তবে এরই মধ্যে ১০৪টি প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি আয় দেশে এসেছে, যার পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। এখন পর্যন্ত ৯৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রপ্তানি আয় দেশে আসেনি। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অনেকেই রপ্তানি আয় ফেরত আনার জন্য সময় চেয়েছে। এদের মধ্যে ১২০ দিনের মধ্যে (কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক থেকে দুই বছর) ৩২টি প্রতিষ্ঠান তাদের রপ্তানি আয় দেশে ফেরত আনেনি। এটি রাজস্ব ফাঁকির শামিল। একই সঙ্গে মানি লন্ডারিং হয়েছে কিনা তা তদন্ত করা দরকার বলে মনে করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102