সব ধরনের বাণিজ্য সংগঠনে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করে গণতন্ত্র ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির সংস্কৃতি চালুর আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ সদস্যরা। একই সঙ্গে তারা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ গঠনেরও দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার রাতে ঢাকার মিন্টো রোডে ফজিলাতুন্নেছা কনভেনশন হলে সম্মিলিত পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানান তারা। সভায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি ও পরিচালকসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেন।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন রাজেশ বলেন, মুষ্টিমেয় কিছু ব্যবসায়ীর কারণে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। ভ্যাট, ট্যাক্স ও এইচএস কোডের নামে এনবিআরের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে ব্যবসায়ীদের লড়াই করতে হবে। ফলে ফেডারেশনে যোগ্য নেতৃত্ব দরকার। সেজন্য সবার মতামতের ভিত্তিতে এফবিসিসিআইতে সংস্কার এনে নির্বাচন দিতে হবে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, বাণিজ্য সংগঠনে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা দরকার। কারণ রাজনৈতিক পরিচয়ে অযোগ্যরা এফবিসিসিআইর নেতৃত্বে আসেন, তারা সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষে কথা বলতে পারে না।
তিনি বলেন, সরকারি দপ্তরে যেকোনো সেবা নিতে গেলে কর্মকর্তাদের স্যার বলতে হয়। তারা নিজেদের প্রভু ভাবতে শুরু করেন। অতএব ভবিষ্যতে কোনো কর্মকর্তাকে যেনো স্যার বলতে না হয় সরকারকে সেই উদ্যোগ নিতে হবে।
আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আমির হোসেন নুরানি বলেন, কোনো মনোনীত পরিচালক দিয়ে এফবিসিসিআই চলবে না। পরিচালক, সভাপতি, সহ-সভাপতিসহ সবাইকে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে বোর্ডে আসতে হবে।
টোয়াবের সভাপতি রাফিউজ্জামান বলেন, এফবিসিসিআইতে গণতন্ত্র ও যোগ্য নেতৃত্বের চর্চা চালু করতে হবে।
বাংলাদেশ পাইকারি মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ বলেন, গত নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হয়েও দলীয়করণের কারণে ফেডারেশনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারিনি। আমাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই সরাসরি ভোটে যোগ্যদের পরিচালনা পর্ষদে আনার আহ্বান জানান তিনি।
এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক মাহবুব ইসলাম রুনু বলেন, অটো পরিচালক বাদ দিতে হবে। তা না হলে কিছু হবে না। পরিচালনা পর্ষদে ৩০ জনের বেশি পরিচালক রাখা ঠিক হবে না। এফবিসিসিআই নতুন ভবন রপ্তানিকারকদের দিতে হবে। কোনো ব্যক্তিখাতে যেন না যায়। সংস্কার না হলে কেউ নির্বাচনে অংশ নেবো না।
সাবেক পরিচালক জালাল উদ্দীন বলেন, কিছু ব্যবসায়ী জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমাতে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে।