শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন

বিকল্প যোগান কতটা,পলিথিন-টিস্যু ব্যাগ এবার বন্ধ হবে?

bornomalanews
  • Update Time : সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৫ Time View

সুপারশপে কেনাকাটা শেষ হলে হিমায়িত খাবার পলিপ্রোপিলিন বা টিস্যু ব্যাগে ভরে দেওয়া হল আবুল বাশারকে। অথচ এই ক্রেতা আগে জানতেন না কাপড়ের মত দেখতে হলেও ব্যাগটি প্লাস্টিকের তৈরি, যা পরিবেশের জন্য ভয়ানক ক্ষতির ও নিষিদ্ধও।

ব্যাগটি তৈরির উপাদান নিয়ে কথা হলে এই ক্রেতা কিছুটা চমকের সুরে শোনালেন তার অভিজ্ঞতার কথা, বলেন, “দেখতে তো কাপড়ের ব্যাগের মতই লাগে। আগে বুঝতে পারিনি, এটা ক্ষতিকর। ব্যাপারটা তো নতুন মোড়কে পুরনো সর্বনাশের মত। নতুন রূপে প্লাস্টিকের এই ব্যাগ দিয়ে তো ধোঁকাবাজি করা হচ্ছে!”

সুপারশপ ছাড়াও এমন ব্যাগে জিনিসপত্র দেওয়া হয় মুদিদোকান ও ওষুধের দোকান থেকেও, যোগ করেন ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আবুল বাশার।

নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারের জন্য মোহাম্মদপুর এলাকারই ওই সুপারশপে ভরসা করা বাশার প্ল্যাস্টিকের ব্যাগের ‘ধোঁকা’ ধরতে পারার পর সচেতন হয়েছেন; বললেন, এখন থেকে বাজার হবে পরিবেশবান্ধব ব্যাগে।

তার মত মনীষা হোসেনেরও প্লাস্টিক জাতীয় পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ নিয়ে ছিল সংশয়। এটি পাতলা কাপড়ের তৈরি মনে করেই দীর্ঘদিন ব্যবহার করে আসছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমার মনে হয় ইচ্ছা করেই ব্যাগগুলো যেন কাপড়ের মত দেখায়; সেভাবেই তৈরি করা হয়, যাতে বাজারে এর ব্যবহার বাড়ে। মুদিদোকান, ওষুধের দোকান, সুপারশপ, শপিং মল থেকে ঘরে আনছি এই ক্ষতিকর ব্যাগ।”

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ পরিবেশবান্ধব নয়। এটি পলিথিনের মতই ক্ষতিকর।

পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ বাজার ছেয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “তবে পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ উৎপাদনকারীরা চাইলে দেশের বাইরে এই ব্যাগ রপ্তানি করতে পারবেন। কিন্তু দেশীয় বাজারে সরবরাহ করতে পারবেন না।”

অক্টোবর থেকে বন্ধ হচ্ছে পলিথিন ও পলিপ্রোপিলিন

ঢাকার জনপ্রিয় কয়েকটি সুপারশপ ঘুরে দেখা গেছে মাছ, মাংস, সবজি, ফল, চাল, ডাল যা-ই কেনা হোক না কেন, হোক সে স্বাভাবিক বা হিমায়িত; সেগুলো পলিথিন বা পলিপ্রোপিলিনে তৈরি ব্যাগে ভরেই ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ক্রেতার হাতে।

অনেক সুপারশপে পলিথিনে তৈরি বড় বাজারের ব্যাগে পণ্যসামগ্রী দেওয়া হয় ক্রেতার হাতে। বেশ কয়েকটি সুপারশপে দেখা যায়, ফ্রোজেন বা হিমায়িত খাবার, আইসক্রিম, টকদই, দুধের মত ফ্রিজে রাখা খাবার পলিপ্রোপিলিন ব্যাগে করে ক্রেতাদের দেওয়া হচ্ছে।

পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ দেখতে কিছুটা চকচকে। সাদা, লাল, নীল রঙের ব্যাগগুলো তৈরির ধরনের কারণে দেখতেই তা অনেকটা কাপড়ের ব্যাগের মত। তবে পানিরোধী পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ তৈরি হয় প্লাস্টিক দিয়েই। তাই দেখতে যেমনই হোক, ক্ষতি প্লাস্টিকের সমানই।

একটি সুপারশপের বিক্রয়কর্মী লাবণী আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পানিরোধী বলে ভেজা প্যাকেটের খাবার পলিপ্রোপিলিন ব্যাগে দেওয়া হয়।”

অক্টোবরের প্রথম দিন থেকে সুপারশপে পলিথিনের শপিং ব্যাগ বা পলিপ্রোপলিনের ব্যাগ রাখা ও ক্রেতাদের না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এ নির্দেশনা দেন। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সুপারশপে বা এর সামনে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ রাখতে হবে, যাতে ক্রেতারা আগে সেগুলো কিনে পরে বাজার করতে পারেন।

সুপারশপ পলিথিন মুক্ত হওয়ার এক মাস পর আগামী নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজার ও উৎপাদনকারী কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন ও পলিপ্রোপিলিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, বিপণন ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

কোনটি পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ? কেন নিষিদ্ধ?

নন-ওভেন পিপি ব্যাগ বা টিস্যু ব্যাগ নামে বাজারে প্রচলিত যে ব্যাগ পাওয়া যায়, সেগুলোই মূলত পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ। তবে টিস্যু ব্যাগ নামেই এটি ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি পরিচিত।

বাজারে কয়েক ধরনের টিস্যু ব্যাগ রয়েছে, যার মধ্যে কিছু হয় পুরুত্বের দিক থেকে পাতলা এবং দেখতে অনেকটা চকচকে। সুপারশপ, মুদিদোকান, ওষুধের দোকানে এই ব্যাগগুলো খুব বেশি ব্যবহার করা হয়। সাদা, লাল, নীল, কমলাসহ বেশ কিছু রঙের এই ব্যাগ ওজনেও খুব হালকা।

এছাড়া সাদা একরঙা বড় আকারের ভিন্ন হাতল লাগানো পুরুত্বের দিক থেকে কিছুটা মোটা ব্যাগও দেখা যায়। সুপারশপে পণ্য দেওয়ার জন্য এমন ব্যাগ ব্যবহার হয়।

আবার শপিং মলে পুরু নন-ওভেন (বুনন ছাড়া) ব্যাগও দেওয়া হয়, যা দেখতে মোটা কাপড়ের ব্যাগের মতই কিন্তু সেগুলোও এক ধরনের টিস্যু ব্যাগ। এগুলোও পলিথিনের মত পরিবেশের একই ধরনের ক্ষতি করে। অনেক ব্যবসায়ীই প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ক্ষতিকর এ ব্যাগকে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ বলে প্রচার করেন।

এসব ব্যাগের উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে কথা হয় টিস্যু ব্যাগ কারখানা সান ব্যাগ অ্যান্ড ফেব্রিক্সের বিক্রয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ দুর্জয়ের সঙ্গে।

তিনি বলেন, নন-ওভেন পিপি ব্যাগ বা টিস্যু ব্যাগ অথবা পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ তৈরি হয় পলিপ্রোপিলিন পলিমার দিয়ে, যা তাপ এবং বাতাসের মাধ্যমে তুলার মত লম্বা ফ্লাফি সুতা আকারে স্পিন করা হয়। তারপর সুতাগুলোকে গরম রোলারের মধ্যে চাপ দিয়ে অনেকটা নমনীয় কিন্তু শক্ত ফেব্রিক্স তৈরি করা হয়। এই ধরনের ফেব্রিক্স বুননের টেক্সচারের সঙ্গে অনেকটাই মেলে। ফলে দেখতে কাপড়ের ব্যাগের মতই মনে হয়।

ফাইল ছবি

পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ কেন নিষিদ্ধ এ বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পলিথিন ও পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ তৈরির প্রধান উপকরণ প্লাস্টিক। তবে পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ তৈরির প্লাস্টিকের ফর্ম কিছুটা আলাদা। তবে এই ব্যাগও একই রকমভাবে পরিবেশের ক্ষতি করে। এই ব্যাগ ভেঙে ছোট ছোট কণা হয়ে আমাদের শরীরে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রবেশ করে। তাই এটি সব সময়েই নিষিদ্ধ ছিল। এখন শুধু নতুন করে ব্যবহার বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

“পলিথনের যে কোন ধরনের ব্যাগ ও প্লাস্টিক যে ফর্মেই তৈরি হোক না কেন তা সহজে পচে না। এই ব্যাগ ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া হলে মাটির সঙ্গে মিশতে সময় নেয় প্রায় সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ বছর। এমন কি মাটির অনেক নিচে গেলেও তা ধ্বংস করছে মাটির স্বাভাবিক স্তরকে। পলিপ্রোপিলিন ব্যাগে থাকা রাসায়নিক পদার্থ মাটির জীব, গাছ, মাটির উর্বরতা, কৃষি উৎপাদনশীলতা সব কিছু ধবংস করে।

ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ এর বাংলাদেশ অঞ্চলের সমন্বয়ক মুনতাসির মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেখতে যতই কাপড়ের মত হোক; এই ব্যাগ মূলত প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি হয়। ব্যাগগুলোর চারপাশ ও হাতল সিলিং করা হয় বা আটকানো হয় তাপ ও চাপের মাধ্যমে গলিয়ে। এই ব্যাগে কোনো বুনন নেই। বুনন ছাড়া তাপ দিয়ে গলিয়ে জোড়া দেওয়া সব ব্যাগই ক্ষতিকারক। টিস্যু ব্যাগ যে প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি তা সহজেই বোঝা যায়। কারণ প্লাস্টিক ছাড়া সুতা কখনই গলিয়ে আটকানো যায় না। সুতা ব্যবহার হলে তাতে অবশ্যই বুনন থাকবে।”

পলিথিনের ব্যাগ এবং পলিপ্রোপিলিন দিয়ে বানানো টিস্যু বা কাপড়ের মত দেখতে শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও ছোট-বড় দোকান থেকে শপিংমল পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে, বিক্রেতা পণ্য ভরে ধরিয়ে দিচ্ছেন ক্রেতার হাতে। শনিবার ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি।

কারখানা ও উৎপাদন

সস্তা পলিথিনের ব্যাগের মতই বাজার ছেয়ে গেছে পলিপ্রোপিলিন বা টিস্যু ব্যাগ। তবে এই ব্যাগ পলিথিন তৈরির কারখানা ও মেশিনে তৈরি হয় না। টিস্যু ব্যাগ তৈরির জন্য ভিন্ন ধরনের মেশিনের প্রয়োজন হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে পলিপ্রোপিলিন বা টিস্যু ব্যাগের ব্যবসা পরিচালনা করেন অনেক ব্যবসায়ী।

সান ব্যাগ অ্যান্ড ফেব্রিক্স নামের একটি টিস্যু ব্যাগ প্রস্তুতকারী কারখানা রয়েছে কামরাঙ্গীরচরের হুজুরপাড়া এলাকায়। এ কারখানার মালিক তার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে টিস্যু ব্যাগ তৈরির উপকরণ, মেশিন, প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিডিও পোস্ট করেন এবং সেখান থেকেও তিনি অর্ডার ধরতে পারেন।

ইসলামপুর রোডে রয়েছে হাজি ইন্টারপ্রাইজ। তাদের রয়েছে কয়েকটি দোকানও। দোকানে ক্রেতারা গিয়ে চাহিদামত ব্যাগ অর্ডার করতে পারবে। এছাড়া ইউটিউবে তাদের পোস্ট করা ভিডিও দেখেও অর্ডার নেয় তারা।

সৈয়দ আওলাদ হোসেন লেইন, নয়াবাজারে অবস্থিত আবিদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল তাদের নিজস্ব কারখানাতেই টিস্যু ব্যাগ উৎপাদন করে থেকে।

সান ব্যাগ অ্যান্ড ফেব্রিক্সের বিক্রয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ দুর্জয় ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপগুলোতে পলিপ্রোপিলিন বা টিস্যু ব্যাগ নিষিদ্ধের ঘোষণা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

 

পলিথিনের ব্যাগ এবং পলিপ্রোপিলিন দিয়ে বানানো টিস্যু বা কাপড়ের মত দেখতে শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও ছোট-বড় দোকান থেকে শপিংমল পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে, বিক্রেতা পণ্য ভরে ধরিয়ে দিচ্ছেন ক্রেতার হাতে। শনিবার ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি।

কথা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই ব্যাগটি আগেও একবার বন্ধ করার কথা বলা হয়েছিল কিন্তু বন্ধ তো হয়নি।”

তার দাবি, এটি পলিথিনের মত পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, যদিও তৈরির মূল উপকরণ একই। তবে এই ব্যাগ সহজেই ছিড়ে যায় এবং মাটির সঙ্গে মিশে যায়।

মোহাম্মদ দুর্জয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, অটো মেশিনের মাধ্যমে ব্যাগগুলো কাটিং করা হয় বিভিন্ন জিএসএম মানে পুরুত্বে। বিভিন্ন কারখানায় (৩০ থেকে ১৫০ জিএসএমের ব্যাগ তৈরি হয়) তৈরি রোলও পাওয়া যায়, যা কিনে নিজের ইচ্ছামত ব্যাগ তৈরি করেন অনেকেই।

“প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা ফেব্রিক্সও কেনা যায় কারখানা থেকে। এই ব্যাগ তৈরির প্রধান উপকরণ এক ধরনের দানা, যা চায়না ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ থেকে আনা হয়।”

এই ব্যাগের বাজার অনেক বড় হয়ে গেছে। সান ব্যাগের দুর্জয় বলেন, “শুধু ঢাকা শহরেই ৮০০-এর বেশি কারখানা রয়েছে। আর আমাদের কারখানায় প্রতি মাসেই ৪ লাখ পিসের বেশি টিস্যু ব্যাগ উৎপাদন হয়।

সরকার তিন ধাপে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

সুপারশপের পর দ্বিতীয় ধাপে ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারগুলোতে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানায় অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়েছে, যাতে এই ব্যাগের উৎপাদন বন্ধ হয়।

বিকল্প দিয়ে সফলতা আসবে?

পলিথিন ও পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও বাজারে যেন বিকল্প ব্যাগের যোগান থাকে, এরই মধ্যে সেটি নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও ২০টি প্রতিষ্ঠান বিকল্প ব্যাগের যোগান বাড়াতে কাজ করছে বলে বলা হচ্ছে।

‘বাজার মনিটরিং ও বিকল্প‘ দুটিকেই গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা রেজওয়ানা হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমেকে বলেন, “আগেও পলিথিন বন্ধের উদ্যোগ অনেকখানি সফল হয়েছিল শুধু বাজার মনিটরিংয়ের কারণে। আর পলিথিনের বিকল্প নিয়েও কাজ হচ্ছে। বাংলাদেশে সব সময়ই পলিথিনের সুস্পষ্ট বিকল্প ছিল। এখন পাট, কাপড় ও কাগজকে বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে। প্লাস্টিক বা পলিথিনের মত দেখতে পচনশীল ব্যাগকেও বিকল্প হিসেবে আপাতত ভাবা হচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ পরিবেশবান্ধব নয়। এটি পলিথিনের মতই ক্ষতিকর। তবে পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ উৎপাদনকারীরা চাইলে দেশের বাইরে এই ব্যাগ রপ্তানি করতে পারবেন। কিন্তু দেশীয় বাজারে সরবারাহ করতে পারবেন না।”

 

পলিথিনের ব্যাগ এবং পলিপ্রোপিলিন দিয়ে বানানো টিস্যু বা কাপড়ের মত দেখতে শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও ছোট-বড় দোকান থেকে শপিংমল পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে, বিক্রেতা পণ্য ভরে ধরিয়ে দিচ্ছিন ক্রেতার হাতে। শনিবার ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি।

তবে বিকল্পের পাশাপাশি কঠোর আইনের প্রয়োগের কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহসভাপতি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “একটি স্থায়ী পরিবর্তন আনতে চাইলে শুরুতে চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। তবে আইনের প্রয়োগ থাকলে মানুষ বাজারে নিজেই বিকল্প নিয়ে যাবেন। আর বিকল্প তৈরি করে আইন প্রয়োগ করতে চাইলে আরও অনেক সময় চলে যাবে। তাই দুটি একই সঙ্গে চললে সুফল মিলবে দ্রুত। পাশাপাশি প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেও ক্ষতি কমানো সম্ভব।”

অন্যদিকে বিকল্প হিসেবে ভিন্নধর্মী ও সৃজনশীল উদ্যোগ যেমন ঝুট কাপড়ের ব্যাগ, মোম দিয়ে আবরণ দেওয়া কাগজ, মোটা ব্রাউন পেপার, টিনের ঝুড়ির মত বিকল্পের কথা বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ অনুবিভাগ) ফাহমিদা খানম।

তিনি বলেন, “বিকল্প ব্যাগটি সহজে ব্যবহার করা যাচ্ছে কি না এবং এটি তৈরির উপকরণ বাজারে সহজলভ্য কি না; সেটিকে গুরত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাগের দাম বাড়বে না।”

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102