এবারের ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তারই ক্লাব সতীর্থ দানি কারভাহাল ও ম্যানসিটির রদ্রি। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন ভিনিসিয়ুস। কিন্তু একেবারে শেষমুহূর্তে গুঞ্জন রটে, ম্যানসিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রির হাতেই উঠছে বর্ষসেরার পুরস্কার। এরপর সত্যিই জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রদ্রিকে ব্যালন ডি’অর বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আর তাতেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদ। প্যারিসে ব্যালন ডি’অরের জমকালো অনুষ্ঠান বয়কটের পাশাপাশি অভিযোগের তির ছুঁড়ে দেয় তারা। ক্লাবটি দাবি করে, তাদের ‘অসম্মানিত’ করা হয়েছে। এবার রিয়ালের সেই মন্তব্যের জবাব দিলো ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ।
মজার ব্যাপার হলো, এবার ব্যালনের লিস্টে ছিল রিয়ালেরই পাঁচজন ফুটবলার। যদিও তাদের মধ্যে কিলিয়ান এমবাপ্পে গত মৌসুমে খেলেছেন পিএসজির হয়ে। এর বাইরে ভিনির সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন জ্যুড বেলিংহ্যাম ও কারাভাহাল। রিয়ালের মতে, কারভাহালকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।
ব্যালনজয়ী নির্ধারণে ভোট দেন ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০০ দেশের সাংবাদিকরা। তাদের ভোটেই প্রেস্টিজিয়াস এই পুরস্কার ওঠে রদ্রির হাতে।
এরপরই এএফপিকে রিয়াল মাদ্রিদ জানায়, ‘পুরস্কার দেওয়ার যে মানদণ্ড, তার ওপর ভিত্তি করে বিজয়ী হিসেবে যদি ভিনিসিয়ুসকে বেছে না নেওয়া হয়, তাহলে একই মানদণ্ড বিচারে কারভাহালকে বিজয়ী হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত। যেহেতু এমন কিছু হয়নি, তাই এটা পরিষ্কার যে ব্যালন ডি’অর-উয়েফা রিয়াল মাদ্রিদকে সম্মান করে না। আর যেখানে সম্মান নেই, রিয়াল মাদ্রিদ সেখানে যায় না।’
ব্যালন অনুষ্ঠান শেষে রিয়ালের অভিযোগ নিয়ে লেকিপে টেলিভিশনকে ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর এডিটর-ইন-চিফ ভিনসেন্ট গার্সিয়া বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে ভিনিসিয়ুস সম্ভবত শীর্ষ পাঁচে থাকা বেলিংহ্যাম ও কারভাহালের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাণিতিকভাবে তাদের কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়ে গেছে। কারণ জুরির বোর্ডে রিয়ালের ৩-৪ জন থেকে একজনকে ভোট দিতে হয়েছে, তাতে লাভবান হয়েছে রদ্রি।’
গার্সিয়া আরও বলেন, ‘আমি রিয়াল মাদ্রিদের জন্য বেশ চাপে ছিলাম, তেমনিভাবে অন্য ক্লাবেও এটা হয়ে থাকে। এসব ব্যাপারে আমি সবসময়ই স্পষ্ট, স্বচ্ছ ও নীরব থেকেছি। এমনটা সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। আমি খুবই নিরানন্দের সঙ্গে অবাক হয়েছি তাদের (রিয়াল মাদ্রিদ) অনুপস্থিতির কথা জানতে পেরে।’
আগে থেকে বিষয়টা কেউ জানতে পারে না দাবি করে ফ্রান্স ফুটবলের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক ক্লাব ও খেলোয়াড়ের ব্যাপারে স্বচ্ছ। এই বছরও ব্যালন বিজয়ীদের আগে থেকেই বিষয়টি জানানো হয়নি। আমার মতে সবশেষ যখন বিষয়টি সামনে আসে, তখন সবারই তা মেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু আমি জানি না কেন তারা এই নিয়মটি বদলাতে চাচ্ছে। যখন রিয়াল মাদ্রিদ তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, আমি জানতাম না সেখানে এমন হতাশাজনক পরিস্থিতি ঘটছে।’