প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। আর এদের মধ্যে অনেকের বয়স খুব কম। পারিবারিক কলহ, সঙ্গী নির্বাচনে ভুল, মানসিক চাপ, তীব্র বিষণ্ণতা, যৌন হয়রানি, পড়াশোনার চাপ—এসব কারণে দিন দিন বাড়ছে আত্মহত্যার ঘটনা। এ ছাড়া জীবন ও সামাজিক দক্ষতার অভাবে বর্তমানে অনেক তরুণ-তরুণী ও শিক্ষার্থী এই আত্মঘাতী পথ বেছে নিচ্ছেন। কেন কম বয়সীদের মধ্যে বাড়ছে আত্মহত্যার হার জেনে নিন কিছু কারণ:-
অভিমান
বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মহত্যার পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে অভিমান। অভিমানের কারণে আত্মহত্যা পরিবারের সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্ক কতটুকু মজবুত, তা নিয়ে চিন্তার উদ্রেক করছে। বছর দুয়েক আগে আত্মহত্যার পেছনে করোনা একটা বড় ভূমিকা রেখেছিল। এ বছর করোনা না থাকলেও আত্মহত্যার খুব একটা হেরফের হয়নি।
প্রত্যাশার চাপ
পারিবারিক প্রত্যাশা আর প্রতিযোগিতার মানসিকতায় চাপও আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা চাপ তৈরি হয়। মাথায় ঢোকে তাকে ভালো লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে হবে। আমরা যে দেশে বসবাস করি এখানে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের পরিবার থেকে আসছে। সবাই কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। তাই ভালো ফল করতে না পারলে মনে আঘাত আনে, তখন মানসিক চাপ বোধ করে। শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেকে বঞ্চিত ও বিচ্ছিন্ন মনে না করেন, এজন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত।
পরীক্ষার ফলাফল
পরীক্ষার ফলাফল বিষয়টিও আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। পরীক্ষায় পাস করেছে, কিন্তু জিপিএ আকাঙ্ক্ষিত হয়নি। ফলে আত্মহত্যা করছে। চাকরির পরীক্ষায় ব্যর্থতায়ও এমন কাজ হচ্ছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও মনমালিন্যের কারণেও অনেকে আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
মন খুলে কথা বলতে না পারা
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মনের কথা খুলে বলার সুযোগ সীমিত হয়ে আসায়, সহজেই এসব ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কিশোর থেকে শুরু করে তরুণরা। এখনকার তরুণরা একটা স্বপ্নময় জগতে বেড়ে উঠছে। অর্থাৎ ভার্চ্যুয়াল একটি জগতে বেড়ে উঠছে। যেটি বাস্তব জগতের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। অনেক সময় মা-বাবার বেষ্টনী থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন জীবনে যাচ্ছে। তখন তারা বাস্তব জীবন মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সচেতনতার অভাব
অনেকাংশে আত্মহত্যার ঘটনাগুলো প্রতিরোধ সম্ভব। তবে এ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি কোনো উদ্যোগ নেই। এ জায়গায় এখনো আমাদের ঘাটতি রয়েছে। বাবা-মাকে সচেতন করার বিষয় আছে। তাদের একটা আচরণ আছে শিশুদের মনে আঘাত করে। এতে আত্মহত্যার বিষয়টি প্ররোচিত করে। সেগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে আত্মহত্যা বন্ধ হতে পারে।