জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক অস্ত্রধারী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাঘচি এক টুইট বার্তায় জানান, ভারত ও পাকিস্তান ইরানের ‘ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী’। তিনি বলেন, “এই সংকটময় সময়ে আমরা দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়ার পথ তৈরি করতে প্রস্তুত আছি।” পাহেলগাঁও হামলা ও উত্তেজনার সূত্রপাত সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’, যা লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছায়া সংগঠন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই হামলার পর ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একাধিক পদক্ষেপ নেয়। ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত করা, সীমান্ত বন্ধ করা, ভিসা দেওয়া বন্ধ এবং সীমান্ত বাণিজ্য কার্যক্রম স্থগিত করার মতো পদক্ষেপ নেয় ভারত। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইসলামাবাদ ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে, ভারতীয়দের জন্য সার্কভুক্ত ভিসা বন্ধ করেছে, বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করেছে এবং আকাশপথে ভারতের বিমানের চলাচল বন্ধ করেছে। জাতিসংঘের উদ্বেগ ও ইরানের ভূমিকা এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি দুই দেশকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “উভয় দেশ যেন উত্তেজনা বাড়ানো থেকে বিরত থাকে।” এমন পরিস্থিতিতে ইরানের মধ্যস্থতার প্রস্তাব বিশ্ব কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সূচনা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইরানের এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এই উত্তেজনা নিরসনে ইরানের প্রস্তাব ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ মেটানোর একটি সম্ভাব্য পথ তৈরি করতে পারে।