জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন নীলা ইস্রাফিল। সোমবার তিনি এ ঘোষণা দেন। এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, “নীলা ইস্রাফিল এনসিপির কেউ নয়। তবে সে নাগরিক কমিটিতে ছিল।” আখতার হোসেনের এমন মন্তব্যের পর নীলা ইস্রাফিল এনসিপির কাছে প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা এতদিন আমাকে কিসের ভিত্তিতে ব্যবহার করেছেন?” নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে সোমবার রাতে এক পোস্টে তিনি বলেন, “আজ যখন আপনাদের নেতার অপরাধ, অনাচার, এবং লিপ্সার বিরুদ্ধে আমি মুখ খুলেছি, তখন আমি আপনাদের কেউ না? এতদিন আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার ত্যাগ আপনাদের পক্ষে ছিল, তখন তো কোনো সমস্যা ছিল না।” নীলা ইস্রাফিল আরও বলেন, “আপনাদের অপরাধ ঢাকার জন্য আজ আমাকেই অস্বীকার করছেন? সত্য বললেই কি নারীকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়? এটাই কি আপনাদের নৈতিকতা? এই প্রশ্ন আজ শুধু আমার না, এই প্রশ্ন প্রতিটি নারীর, যাকে আপনারা দলীয় পরিচয়ে ব্যবহার করেছেন, আর পরে ‘অপরিচিত’ বানিয়েছেন।” তিনি উল্লেখ করেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টি আজ আমাকে অস্বীকার করছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, আপনারা কি আমাকে সত্যিই কখনো অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, নাকি কেবল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতেন?” নীলা বলেন, “আমার কণ্ঠ যখন আপনাদের পক্ষে ছিল, তখন তো ‘আমাদের নেত্রী’, ‘আমাদের শক্তি’ বলে গলা ফাটাতেন। এখন যখন আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি, তখন ‘সে তো আমাদের কেউ না’? এটা কি কোনো রাজনৈতিক দলের মূল্যবোধ? নাকি এটি প্রমাণ করে, দল নয়, আপনারা ব্যক্তি রক্ষায় ব্যস্ত?” তিনি আরও বলেন, “আমি অবাক হই না যে আজ জাতীয় নাগরিক পার্টি আমাকে অস্বীকার করছে। কারণ সত্য বললেই অনেক সময় আপনজনই মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু আমি একটিই প্রশ্ন করতে চাই, যদি আমি আপনাদের কেউ না হয়ে থাকি, তাহলে আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার মাঠের উপস্থিতি এতদিন আপনারা কেন ব্যবহার করেছেন?” নীলা ইস্রাফিলের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং নারীদের প্রতি রাজনৈতিক দলের আচরণ ও মূল্যবোধের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, “একজন নারী যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখনই তাকে দলহীন, আশ্রয়হীন প্রমাণ করতে পারাটাই কি রাজনীতির নতুন রীতি? আমি কারো পরিচয়ে নই, আমি আমার ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো একজন মানুষ। আমাকে অস্বীকার করে সত্যকে অস্বীকার করা যাবে না।”