নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে যোগদান করতে পারেননি অধ্যাপক ডা. কান্তা রায় রিমি। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিতর্কিত এ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিনি যোগ না দিয়ে দুপুর ২ টার দিকে তিনি ফিরে যেতে বাধ্য হন।
জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব দুর-রে-শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ডা. কান্তা রায় রিমিকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজে পদায়ন করা হয়।এরপর তিনি কলেজে যোগদানের জন্য সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজে যান। বিষয়টি জানার পর তার যোগদান ঠেকাতে মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন। অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় ২ ঘণ্টা আন্দোলনের পর অবশেষে অধ্যক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ স্থগিত করেন শিক্ষার্থীর।যদি আগামীতে আবারও তিনি এ কলেজে যোগদান করেন তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই চিকিৎসক শিক্ষক হয়েও রাজনীতিতে জড়িত, স্বার্থান্বেষী ও দুর্নীতিবাজ। তিনি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কলেজের বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি করতেন।
বেশ কয়েকজন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ডা. কান্তা রায় বিগত সরকারের সময়ে দিনাজপুর মেডিক্যালে শিক্ষকতা করতেন।সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নানা বৈষম্য করেছেন তিনি। ইন্টারভিউ রুমে শিক্ষার্থীদের হিজাব পরতে বারণ করতেন ডা. কান্তা রায়। পাশাপাশি ভিন্ন মতের প্রতি বিদ্বেষী ছিলেন তিনি। এসব অভিযোগে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে তাকে বদলি করা হয় দিনাজপুরে। সেখান থেকে আবারও তাকে নওগাঁয় বদলি করা হয়।যদি তিনি এ কলেজে যোগদান করেন তাহলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অকৃতকার্য (ফেল) দেখানো হবে। নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি ও হয়রানি করা হবে।আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, অধ্যাপক ডা. কান্তা রায় রিমি বিভিন্ন কলেজে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন না। এরপর শাস্তিমূলক বদলি হয়ে নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজে যোগদান করতে আসছেন। তাকে যেন কলেজে যোগদান না করতে দেওয়া হয়, এজন্য অধ্যক্ষ স্যারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। দাবির প্রেক্ষিতে তাকে যোগদান করতে দেওয়া হবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়। যদি তিনি যোগদান করেন তাহলে আগামীতে ক্লাস বর্জন ও পরীক্ষা বন্ধ রাখাসহ বৃহত্তর কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন করা হবে।নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাক্তার পীযূষ কুমার কুন্ডু বলেন, এনাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. কান্তা রায় রিমি যোগদান করতে আসছিলেন। শিক্ষার্থীরা তাকে যোগদান না করতে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন মুখে তাকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি এবং হবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।