ধানমণ্ডি ৩২ ভাঙার ঘটনায় জড়িতদের জনসম্মুখে জবাই করার হুমকি দিয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল গালিব। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই ভয়াবহ হুমকি দেন। তার এই বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
গালিব তার পোস্টে উল্লেখ করেন, “মহান আল্লাহ তায়ালার কসম, ধানমণ্ডি ৩২ এ যারা আঘাত হেনেছে এবং বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ও জাতীয় চার নেতার স্মৃতিফলক যারা ভাঙার স্পর্ধা দেখাচ্ছে, তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে জনসম্মুখে জবাই করা হবে। এই দিন দিন নয়, আরো দিন আছে; এই দিনেরে নিয়ে যাব সেই দিনের কাছে।” তিনি আরও বলেন, “সবাই নিজের মনকে প্রশ্ন করুন, আপনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না বিপক্ষে? জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”
গালিবের এই পোস্টের পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মন্তব্য করতে শুরু করেন। এস এম সালমান সাব্বির নামে এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, “মুজিবকে যারা হত্যা করেছে, তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।” অন্যদিকে, শরীফ মো. সাদাত লিখেছেন, “ফ্যাসিবাদী বয়ান আর জবাই করার হুমকিতে কাজ হবে না! ছাত্রসমাজ জেগেছে!”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ সাইফ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “তুই জবাই করতে আসবি আর অন্যরা তোরে আদর করবে? পাঠা কোথাকার? শত আকাম করেও কোনো অনুশোচনা নাই। এর মধ্যে আবার হুমকি! তুই তোর বাপের পোলা হইলে কোথায় আছিস বল, পোলাপান যাবে। তুই তাদের জবাই করিস। শুধু বল কোথায় আছিস।”
এম এইচ মেহরাব নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “তোর মতো নেড়ি কুত্তার হুমকি মানায় না। ক্যাম্পাস থেকে কিভাবে পালায় গেছিস, দেখেছি।”
এ বিষয়ে জানতে আসাদুল্লা-হিল গালিবকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। জানা যায়, গালিব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান তিনি। এরপর থেকে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, গালিবের হুমকি এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া উভয়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা দেশের যুব সমাজের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তাদের অবস্থানকে স্পষ্ট করে।