মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ১১:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে ‘কিংস পার্টি’ বলা হচ্ছে কেন? ডিসেম্বরের টাইমলাইন অতিক্রম করতে চায় না নির্বাচন কমিশন: সিইসি ঈদের আগে ‘বড় সুখবর’ পেলেন সরকারি চাকরিজীবীরা পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু আইন প্রণয়নসহ ১৫ দাবি মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস নিশ্চিতকরণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত বিআইএফ এর সভাপতি বি এম ইউসুফ আলীকে এসজএ’র শুভেচ্ছা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের কোনো অবনতি হয়নি : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৪ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ:আবু সাঈদ হত্যা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রতীকী ফাঁসি’ ধর্ষণের শাস্তি দাবিতে

bornomalanews
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫
  • ১ Time View

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে, যেখানে ইতিহাসের কিছু মূহুর্ত যেমন উঠে আসে, তেমনি কিছু দৃশ্যও চিরকাল পছন্দের হয়ে থাকে—এখানে এক অস্বাভাবিক দৃশ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সামনে একটি ফাঁসির মঞ্চ, আর তার পাশেই ঝুলে থাকা এক ধর্ষক, যিনি বাস্তব জীবনে ধর্ষক নন। তাঁর মুখে কালো কাপড় মোড়া, যেন এক নিদারুণ প্রতীক, যা একটি ভয়াবহ সমাজের অব্যাহত সমস্যার মুখোমুখি দাঁড় করায়। হ্যাঁ, এটি কোনো নাটক নয়, এটি ছিল শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের ভাষা, তাদের দাবির এক অঙ্গীকার—ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি, মৃত্যু।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক বিপুল, তবে গভীর, প্রতিবাদ আয়োজন করেন। তাদের মুখে কালো কাপড়, হাতে প্রতিবাদ এবং মঞ্চের পাশেই ফাঁসির রশিতে ঝুলে থাকা একটি “প্রতীকী ধর্ষক”—এটা ছিল এক দৃশ্য যা হঠাৎ করেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। তাদের দাবি, তারা যা চেয়েছে তা ছিল একটিই: ধর্ষকের জন্য মৃত্যুদণ্ড, সর্বোচ্চ শাস্তি। তবে এটি ছিল শুধু একটি মঞ্চস্থ প্রতিবাদ নয়, এর মধ্যে ছিল গান, কবিতা, একক অভিনয়—সমাজের প্রতিটি স্তরে ধর্ষণের বিরুদ্ধে একটি খোলামেলা প্রতিবাদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাইর ইসলাম, যিনি এই আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন, বলেন, “আজকের এই প্রতীকী ফাঁসির কর্মসূচি ছিল এক গভীর প্রতিবাদ, যেখানে আমরা সারা দেশের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছি যে ধর্ষকের জন্য একমাত্র শাস্তি হতে হবে ফাঁসি। আমরা প্রতিবাদ করেছি, কেবল ধর্ষকদের বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশের চলমান নিরাপত্তাহীনতা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সম্পর্কে।” এদিন ক্যাম্পাসের তুখোড় আবৃত্তি শিল্পীরা দ্রোহের কবিতা পাঠ করেছিলেন, যা যেন একটি আগুনের শিখা, সমাজের অন্ধকার দিকগুলোর প্রতি বারবার আঘাত হানছিল।

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বলেন, “আমরা বিগত কয়েক বছরে দেখেছি, সমাজে ধর্ষিতাকে কখনও বিচারের সম্মুখীন হতে হয়, কখনও আবার তাকে লাঞ্ছিত হতে হয়, অথচ ধর্ষকরা রাজনৈতিক ক্ষমতার আড়ালে উচ্চবিলাসী জীবনযাপন করছে। সমাজে যে অদৃশ্য নিষ্ঠুরতা ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে ধর্ষিতার পরিবারের কাছেও জায়গা নেই, সেখানে কোনো উন্নতি হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “এমন যদি চলতে থাকে, তাহলে আমাদের সমাজের অগ্রগতি কিসের? আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ আশা করি।”

এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানায়নি, তারা যে এক আদর্শিক লক্ষ্য অর্জনের পথে চলছে, তা ছিল প্রতিটি পদক্ষেপে স্পষ্ট। প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী, বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ে, এক হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন—একটি প্রতিবাদের মঞ্চ তৈরি হয়েছিল, যেখানে কেবল এক দাবি ছিল, এক চাওয়া ছিল: ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি—ফাঁসি।

এমন এক ক্যাম্পাস, এমন এক আন্দোলন—যেখানে প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি ভাবনা, প্রতিটি অঙ্গীকার যেন সমাজের প্রতিটি স্তরকে নিঃশব্দভাবে প্রতিবাদে ঠেলে দিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102