রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আলাল খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ফেরতের দাবি জানালেন বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন কুবিতে নতুন রাজনৈতিক দল আসা প্রয়োজন ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে: সারজিস আপিল শুনানি শেষ, রায় যেকোনো দিন : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কেনিয়ার চুক্তি বাতিল যুক্তরাষ্ট্রে আদানির বিরুদ্ধে পরোয়ানার পর, বাংলাদেশ কী করবে? মোহিনীর সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন,এআর রহমানের বিচ্ছেদ; কি বলছেন পুত্র-কন্যা? শেয়ারে ‘ধস’ গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলার পরেই বোমা হামলার পরিকল্পনা নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে: ফ্লোরিডায় গৃহহীন ব্যক্তি গ্রেফতার বিতর্কিত আউট নিয়ে প্রশ্ন আর সমালোচনার ঝড় রাহুলের যেভাবে ফ্রিজে রাখা যায় রসুন

শিক্ষক মাত্র ১৬ হাজার ৫০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য

bornomalanews
  • Update Time : সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৫ Time View

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য এক জন করে শিক্ষক থাকতে হবে। দেশে বর্তমান শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত সরকারি কলেজগুলোতে উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা স্তরে প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ বর্তমান সরকারি কলেজসহ শিক্ষা প্রশাসনে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যা মাত্র ১৬ হাজার।অর্থাৎ দেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাত ১:৩১২। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৩০ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং এই অনুপাত প্রতি বছর বেড়েই যাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের দিন দিন অবনতি হওয়ার অন্যতম কারণ এটি বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা। তারা বলেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের পদ সৃজন অপরিহার্য।

শিক্ষক সংকট নিরসনের উদ্যোগ হিসেবে ২০১৪ সালে শিক্ষা ক্যাডারে ১২ হাজার ৫১৯ পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। ২০১৫ সালে ২৩টি কর্ম-এলাকায় ২৩ জন কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী কমিটি ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৭৭ জন অধ্যাপক, ৩ হাজার ৩৪৮ জন সহযোগী অধ্যাপক, ৪ হাজার ৩২৬ জন সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষকের ৩ হাজার ৪৬৮টি পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব পাঠানো হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু তা আটকে আছে এক দশক ধরে। শিক্ষকের পদ সৃষ্টি না হওয়ায় পদোন্নতি বঞ্চিত রয়েছেন অনেক শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় ১০ হাজার সহকারী, সহযোগী ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। কিন্তু পদোন্নতি না হওয়ায় তারা একই পদে চাকরি করছেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ৯২২ জন সহযোগী অধ্যাপককে পদোন্নতি দিয়ে অধ্যাপক করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তবে চাহিদা অনুযায়ী এই সংখ্যা কম। পদোন্নতিবঞ্চিত ১০ জন শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয় ইত্তেফাকের এই প্রতিনিধির। শিক্ষকরা বলেন, প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্রসহ কয়েকটি ক্যাডার বাদে অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সময়মতো পদোন্নতি হয় না। অথচ জনপ্রশাসনসহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে পদের বাইরেও পদোন্নতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি প্রশাসন ক্যাডারের পদ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগে প্রশাসনে ক্যাডারে পদ ছিল ৩ হাজার ৯৭টি, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৬টি। শিক্ষা ক্যাডারে আগে প্রতি বছর কলেজভিত্তিক কিছু পদ সৃজন করত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেটিও বন্ধ। এতে দিন দিন বাড়ছে পদোন্নতিজট। ফলে শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। শুধু বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার নয়, সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও সময়মতো পদোন্নতি পাচ্ছেন না। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত নরওয়েতে যথাক্রমে ১ :১১ এবং ১ :১০, স্পেনে যথাক্রমে ১ :১৩ এবং ১ :১০, জাপানে যথাক্রমে ১ :১৬ এবং ১ :১২, ফ্রান্সে যথাক্রমে ১ :১৮ এবং ১ :১৩, যুক্তরাষ্ট্রে ১ :১৬, যুক্তরাজ্যে যথাক্রমে ১ :২১ এবং ১ :১৬। বাংলাদেশে কলেজ পর্যায়ে ১ :৩৮, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে ১ :৪, স্কুল ও কলেজগুলোতে গড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১ :৩০, মাদ্রাসা শিক্ষা পর্যায়ে ১ :২৪, টেকনিক্যাল-ভোকেশনাল শিক্ষায় ১ :২১, প্রফেশনাল শিক্ষায় ১ :১১, টিচার এডুকেশন প্রোগ্রামে ১ :১২, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষায় ১ :৪০। সর্বোপরি শিক্ষাক্ষেত্রে ১ :৩২। বিশেষ করে প্রাইভেট কলেজ পর্যায়ে ১ :৩৭, পাবলিক কলেজ পর্যায়ে ১ :৫৩। একইভাবে স্কুল ও কলেজকে একসঙ্গে ধরা হলে প্রাইভেট পর্যায়ে ১ :২৯, পাবলিক পর্যায়ে ১ :৪১। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১ :২২, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১ :৫৮ রয়েছে।

শিক্ষাবিদরা বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত কম হলে শিক্ষকরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন, তাদের সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করতে পারেন। এমনকি এক জন শিক্ষক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রতি আলাদাভাবে নজর রাখতে পারেন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দক্ষতা অনুসারে শিক্ষকরা আলাদা শিক্ষণ কৌশল তৈরি করতে পারেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বেশি হলে শিক্ষকদের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। বরং এ অনুপাত কম হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা শিক্ষার্থীর মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102