জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কাউসার আলম আরমানের ওপর নিজ এলাকা কিশোরগঞ্জে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন এলাকা থেকে মশাল মিছিলটি বের করেন তারা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম সঞ্চালনায় উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল হাই স্বপন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জে আরমানের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এই সরকারকে বসানো হয়েছে ৯টা থেকে ৫টা অফিস করানোর জন্য নয়। বরং এই দেশের মানুষ এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করার জন্য। গত দুইমাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ এবং পেশাদার পুলিশ বাহিনীর কাউকে বিচারের আওতায় আনা বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। কিন্তু আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারে উঠেপড়ে লেগেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তথ্য উপদেষ্টাকে জানিয়ে দিতে চাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরমানের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় না আনা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আন্দোলনে হামলাকারী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এবং হত্যাকারী পুলিশদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা সচিবালয় ঘেরাও করতে বাধ্য হবো। এই সরকারকে আমরা স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের মাধ্যমে এনেছি, প্রয়োজনে এই সরকারেরও পতন ঘটানো হবে।’
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক সন্ত্রাসী ও খুনের নির্দেশদাতা বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টগুলোতে পালিয়ে আছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও হলগুলোতে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পুনর্বাসিত হচ্ছে। অথচ আন্দোলনকারী আমাদের সহযোদ্ধারা এখনো নির্যাতিত হয়ে যাচ্ছেন। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলতে চাই, যে নয় দফার ওপর ভিত্তি করে আপনারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন, সেই নয় দফার অন্যতম দাবি ছিল খুনিদের দোসরদের বিচার করতে হবে। কিন্তু আপনারা যদি এর বিচার না করেন কিংবা বিচার করতে বিলম্ব করেন, তাহলে জনগণের ম্যান্ডেটের সঙ্গে আপনারা প্রতারণা করছেন৷ একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব হামলাকারীরা চিহ্নিত হয়েছে, তাদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তার মানে আমরা বুঝতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকার মব জাস্টিসকে উসকে দিচ্ছে। কারণ তারা চায়, সাধারণ মানুষ বিচারিক প্রক্রিয়ায় বাইরে গিয়ে এ সন্ত্রাসীদের বিচার করুক।’