জেনজি অর্থাৎ জেনারেশন জেডের তরুণ-তরুণীদের অন্যতম পছন্দের পানীয় কফি। তার আগের জেনারেশনের ব্যক্তিদের মধ্যেও কিন্তু কফি পানের প্রবণতা কম ছিল না। তবে এখনকার ছেলে মেয়েরা কোনো উপলক্ষ্য পেলেই কফি ডেটকে বেছে নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কফি সব জেনারেশনের কাছে জনপ্রিয় হলেও তার উপকারিতা নিয়ে দ্বিমত আছে। কেউ বলেন, কফি পান করা ভালো। আবার কারো মতে, এই পানীয়ে থাকা ক্যাফেইন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো মূলত বহু কাল ধরে চলে আসা প্রচলিত কিছু কথা। যার মধ্যে বেশির ভাগই ভুল।
কফিতে ক্যাফেইন রয়েছে। তবে, ক্যাফেইনের উৎস শুধু কফি বীজ নয়। বেশ কিছু উদ্ভিদ, ফল, এমনকি গাছের পাতাতেও ক্যাফেইন থাকে। তাই কফি খেলেই শরীর খারাপ হবে, এমন ধারণা পুষে রাখার কোনো কারণ নেই।
কাজের সময় অতিরিক্ত ক্লান্তি, ঝিমুনি ভাব কাটাতে সাহায্য করে কফি। কিন্তু অনেকেই মনে করেন কফি পান করলে অনিদ্রাজনিত সমস্যা হয়। এটি সত্য নয়। তবে ঘন ঘন কফি পানের অভ্যাসে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হতে পারে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, সারা দিনে ৪০০ মিলিগ্রাম কফি পান করা নিরাপদ। যাদের আগে থেকেই অনিদ্রাজনিত সমস্যা রয়েছে, তারা ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বা পানীয় পান করবেন না।
অনেকেই মনে করেন, কফি পান করলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো, কফিতে পানির ভাগ প্রায় ৯৮ শতাংশ। তাই এমন ধারণা যে বাস্তবসম্মত নয়, তা বোঝাই যাচ্ছে।
কফি মেদ ঝরে কি না, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। কিন্তু তেমন কোনো প্রমাণ এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তবে সারা দিন শারীরিক পরিশ্রম করার মতো শক্তি জোগাতে সাহায্য করে এই পানীয়।
সীমিত পরিমাণে কফি পানেও আসক্তি জন্মাতে পারে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। তাই নিয়মিত কফি পান করলে তার উপর খানিকটা হলেও নির্ভরতা জন্মাতে পারে। তবে তা কখনোই আসক্তির পর্যায়ে যাবে না।
গর্ভবতী নারীদের পরিমিত কফি পানের উপদেশ দেন চিকিৎসকেরা। তবে এখন পর্যন্ত ফার্টিলিটি ও ক্যাফেইনের মধ্যে সরাসরি কোনো যোগ নেই বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গর্ভাবস্থায় পরিমিত পরিমাণে কফি পান করা যেতেই পারে। তবে কোনো জটিলতা থাকলে, শুধু কফিই না বেশ কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উত্তম।