মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ আবু সাঈদ হত্যা : ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উদযাপনের জন্য জেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছে এনবিআরে প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ, আন্দোলনকারীদের অবস্থান প্রকাশ ইরানে যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ২৫০ বাংলাদেশির দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন: সরকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে হাসিনার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করলো ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) হজপালন শেষে দেশে ফিরলেন ৪০ হাজার ৫২০ জন হাজি

বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট, রোজার আগেই বিপাকে ক্রেতারা

bornomalanews
  • Update Time : শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ১১৯ Time View

বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট, রোজার আগেই বিপাকে ক্রেতারা

‘সয়াবিন তেল কিনতে ১০ থেকে ১২টা মুদি দোকান ঘুরেছি। কিন্তু কোথাও খোলা তেল পাইনি। বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলও নেই মুদি দোকানে। বাধ্য হয়ে সুপারশপ থেকে দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনলাম। টাকা সীমিত থাকায় আর কিছু কিনতে পারিনি’, এভাবেই আক্ষেপের কথা বলছিলেন পুরান ঢাকার কলতাবাজারের বাসিন্দা মনি বেগম (৪২)।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিবছর রোজা এলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভেবেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকার সব সিন্ডিকেট ভেঙে একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। কিন্তু গত ছয় মাসে সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি তারা। প্রয়োজনীয় কোনও জিনিসপত্রের দাম এখনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি‌। চালের দাম বেড়েই চলেছে। এখন আবার তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।’

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর একাধিক বাজারের মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সয়াবিন তেলের সংকটে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত ভোজ্যতেল নেই। তবে সুপারশপগুলোতে কম-বেশি তেল পাওয়া যাচ্ছে।

ভোক্তাদের অভিযোগ, রমজানে বেশি দামে বিক্রির জন্য সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক দোকানি শুধু নিয়মিত ও পরিচিত ক্রেতাদের কাছে তেল বিক্রি করছেন। এক-দুই লিটারের বোতলজাত তেল দোকানিরা মজুত করেছেন অতিরিক্ত মুনাফার আশায়। এতে সয়াবিন তেলের সংকটে অনেকেই সূর্যমুখী ও রাইস ব্র্যান তেল নিয়ে বাসায় ফিরছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজার থেকে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিতে মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে সিন্ডিকেট। সেখান থেকে ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে খুচরা বাজারে সরবরাহ কমেছে। তাই বাড়তি দামেও চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। এমনকি সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দাম নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, সংকট দেখিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল লিটার প্রতি পাঁচ থেকে আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে খোলা পাম অয়েল ১৬৫ এবং সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে যেসব দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যায়, সেসব ব্যবসায়ীরা লিটার প্রতি ১৮০-১৮৫ টাকা ধরে বিক্রি করছেন।

নয়াবাজারে তেল কিনতে এসেছেন মো. আশরাফ। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘দুই লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পুরো বাজার ঘুরেছি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পেয়েছি। তাও গায়ের মূল্য থেকে পাঁচ টাকা বাড়তি দিয়ে কিনতে হচ্ছে।’

একই বাজারে তেল কিনতে আসা সাহেলা বেগম বলেন, ‘বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেশি হওয়ায় রাইস ব্র্যান তেল কিনেছি।’

পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে তেল কিনতে আসা সায়েম হোসেন বলেন, ‘বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতা তেল কিনতে এসে খালি হাতেই ফিরছেন। এলাকার দোকানে তেমন তেল নেই। দোকানিরা রোজায় চড়া দামে বিক্রির আশায় মজুত করেছে।’ বেশ কয়েকদিন ধরেই সয়াবিন তেল নিয়ে এমন ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার কারণ এবং সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে বিভিন্ন তেল কোম্পানির ডিলাররা বলেন, কোম্পানি থেকে আমাদের আগের মতো তেল সরবরাহ করছে না। স্বাভাবিকভাবে যেখানে একজন ডিলারের চাহিদা ১০০ কার্টন, সেখানে কোম্পানি অর্ধেক তেলও দিচ্ছে। এ কারণে বাজারে তেলের সরবরাহ কম। আর এই সুযোগে খুচরা বিক্রেতারা নির্দিষ্ট দামের চেয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করছে।

সয়াবিন তেলের সংকটের বিষয়ে রাফিত মিয়াজী নামে এক পাইকারি তেলের ব্যবসায়ী বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থির। দেশে ডলার সংকট এখনও চলমান। আমদানিকারকরা আগের মতো ভোজ্যতেল আমদানি করছেন না। বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দামও আগের চেয়ে বেড়েছে। এসব কারণে ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী।’

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে পাম অয়েলের দাম এবারের মতো আর বাড়েনি। এটাই সর্বোচ্চ দাম। মূলত উৎপাদন সংকট, বায়োডিজেলে পাম অয়েল ব্যবহারের পরিমাণ পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধিজনিত কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির বুকিং রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে গেছে। এসব কারণে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102