নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে যে বিপ্লব হয়েছিল, তার পর থেকে রাজনীতিতে সুবাতাস আসার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু ক্ষমতার লোভে আবার রাজনীতি কলুষিত হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে নানা রকম কুৎসা ও অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বিপন্ন করছে। বিশেষ করে ডিজিটাল মিডিয়ায় এই নোংরামি ও প্রতিহিংসা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বর্বরোচিত সোহাগ হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম নোংরামি শুরু হয়েছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে টার্গেট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনীতির মাঠে অনৈক্যের সুর ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একে অপরকে কটাক্ষ করে বক্তব্য রাখছে। নির্বাচনের সময় নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার ইস্যুর সমাধান না হওয়ায় নতুন করে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়ায় যে ফাটল রয়েছে, সেটি দিনদিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে। এতে করে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসররা। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসছে, এবং নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, বিরোধগুলোও তত স্পষ্ট হতে থাকবে। বর্তমান অনৈক্যের সুর দেশের ভবিষ্যতের জন্য মোটেই কল্যাণকর নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব বা ভুলবোঝাবুঝি কাম্য নয়। যদি বিরোধকে উসকে দেওয়ার মতো পাল্টাপাল্টি বক্তব্য অব্যাহত থাকে, তাহলে দেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ার বিরোধীরা উৎসাহিত ও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। এখন সময় এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার, যাতে দেশের স্বার্থে একটি সুস্থ ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা যায়।